প্রকাশিত: Wed, Mar 13, 2024 1:19 PM
আপডেট: Wed, Jun 25, 2025 4:21 AM

[১]কলেজ ছাত্রী মুনিয়া হত্যা মামলা বাদীর নারাজি আবেদনের শুনানি শেষ, আদেশ ২০ মার্চ

এম.এ. লতিফ, আদালত প্রতিবেদক: [২] রোববার (১০ মার্চ ) নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল- ৮ এর বিচারক শওকত আলীর আদালতে কলেজ ছাত্রী মুনিয়া হত্যা মামলায় বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদীর নারাজি আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানিতে অংশ নেন  বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন ও এডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন।

[৩] শুনানিতে তারা তদন্ত কর্মকর্তার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরেন। আদালতে বাদী পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, “মুনিয়ার মরদেহের ময়না তদন্ত ও সংগৃহীত আলামতের ডিএনএ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুনিয়ার পোশাকে পুরুষের শুক্রাণু পাওয়া গেছে’। পিবিআই এর তদন্তেও এটা প্রমাণিত হয়েছে। একমাত্র সায়েম সোবহান আনভীর ছাড়া ওই ফ্লাটে আর কারও যাওয়ার অনুমতি ছিল না। তাহলে বলা যায় এ শুক্রাণু মামলার প্রধান আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের”। অথচ প্রতিবেদনের শেষ অংশে তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, “অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি”।

[৪] বাদী পক্ষের অন্যতম আইনজীবী এডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন জানান “এদিন আদালতে আইনের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে আসামি পক্ষের একঝাঁক আইনজীবী বক্তব্য রাখার চেষ্টা করলে বিজ্ঞ আদালত তাতে সায় না দেওয়ায় তারা কোনও বক্তব্য দিতে পারেননি। কারণ তদন্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করার পূর্বে আসামি পক্ষ এ মামলায় কোনও প্রকার বক্তব্য দেয়া আইনে নিষেধ রয়েছে”।

[৫] তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ‘মামলার প্রধান আসামি সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত ও ধনাঢ্য ব্যক্তি বিধায় তার শুক্রানুর ডিএনএ টেস্ট করার প্রয়োজন নাই বলে মনে করেন তদন্ত কর্মকর্তা’। এ বিষয়ে বাদী পক্ষের অন্যতম আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন বলেন, “ আইনে ধনী গরিব বলে কোনও কিছু নেই, আইনের চোখে সবাই সমান”। এ বিষয়ে শুনানি চলাকিলীন সময় আদালতের অনুমতি নিয়ে আনভীরের ভ্রূণ ও শুক্রানুর ডিএনএ টেস্ট করে মুনিয়ার পোশাকে পাওয়া ভ্রূণ ও শুক্রানুর ডিএনএ’র সাথে মিলে কিনা তা পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেয়ার আদেশের জন্য আদালতে সম্পুরক আবেদন জমা দেয়া হয় বলে এডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন ‘আমাদের নতুন সময়’কে জানান।    

[৬] ব্যারিস্টার সারোয়ার আদালতে আরও বলেন, পিবিআই-এর তদন্ত প্রতিবেদনে এজাহারের বক্তব্যের ব্যপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ফরেনসিক প্রতিবেদনের বর্ণনা অনুযায়ী ‘ভিক্টিম মুনিয়াকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করা হয়েছে। তার অন্তর্বাস ছেঁড়া ছিল, গোপনাঙ্গে আঘাতজনিত চিহ্ন ছিল। ধর্ষণের জন্য ধ্বস্তাধস্তি করলে এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়’। এসব বিষয়গুলি কিছুই তারা পরিস্কার করেনি।  

[৭] বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন ‘আমাদের নতুন সময়’কে আরও জানান, বাদী পক্ষের আইনজীবীগণের বক্তব্য শুনে এক পর্যায়ে বিচারক বলেন-“তদন্ত সংস্থা পিবিআই’য়ের কাছে এটা আশা করিনি। এত প্রমাণ থাকার পরও তদন্ত কর্মকর্তা কীভাবে সব আসামিকে অভিযোগ থেকে অব্যহতি দিয়ে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়?”

[৮] এদিন কার্যবিধির ২২ ধারায় মুনিয়ার বোন ও মামলার বাদী নুসরাত জাহানের জবানবন্দি আদালত রেকর্ড করেন। বাদী তার জবানবন্দিতে বলেন, “বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীর শুধু তার বোন মুনিয়াকেই নয়, তার সাথে মুনিয়ার গর্ভে আনভীরের অনাগত সন্তানকেও হত্যা করা হয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তা পুরো বিষয়টি এড়িয়ে গেছে”।  

[৯] শুনানি শেষে নারাজি আবেদন ও আনভীরের ভ্রূণ ও শুক্রাণু টেস্টের আবেদন বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২০ মার্চ তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী